চরম অবাক করার মতো একটি বস্তু আবিষ্কার করেছেন গবেষকেরা। তারা দুই কোটি
৫০ লাখ বছর আগেকার পাথরের তৈরি একটি মাইক্রোচিপ আবিষ্কার করেছেন বলে ঘোষণা
দিয়েছেন।
তবে বিস্ময়ের ঘোর তারা এখনো কাটাতে পারেননি। তাদের প্রশ্ন,
অত্যাধুনিক যুগের এই মাইক্রোচিপ বিজ্ঞানের আবিষ্কার। কিন্তু দুই কোটি আড়াই
লাখ বছর আগে তার ব্যবহার কীভাবে সম্ভব!
গবেষকরা জানাচ্ছেন, রাশিয়ার ল্যাবিনস্কের এক জেলে প্রথমে এটি খুঁজে
পেয়েছেন। এই চিপটি খুঁজে পাওয়ার পর গবেষকরা দাবি করছেন, এই আবিষ্কার নতুন
এক ইতিহাসের সৃষ্টি করেছে। কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, এই আবিষ্কার
তাত্ত্বিকদের মধ্যে কয়েক বছর ধরে বিতর্ক সৃষ্টি করে যাবে।
তারা আরো জানাচ্ছেন, তারা যে পাথরের মাইক্রোচিপের সন্ধান পেয়েছেন, তা
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন, এটি দুই কোটি ৫০ লাখ বছর আগে ব্যবহৃত
হয়েছে।
এই আবিষ্কার নিয়ে লাগাতার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছেই। তারপরও এই এন্টিক
পাথর খণ্ড নিয়ে গবেষকরা একবাক্যে বলছেন, এটি প্রাচীনকালের একধরনের
মাইক্রোচিপ।
এই মাইক্রোচিপ নিয়ে এখন একটাই সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেটি হলো-
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এর ব্যবহারের সময়কাল হিসেবে পাওয়া গেছে, দুই কোটি ২৫
লাখ থেকে দুই কোটি ৫০ লাখ সময়কালের মধ্যে।
এখন গবেষকেরা আরো ধন্ধে পড়েছেন যে, এত বছর আগে কে বা কারা এই পাথরের
মাইক্রোচিপ ব্যবহার করেছেন! তাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, তাহলে কি দুই কোটি ৫০
লাখ বছর আগেও এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ছিল? তখন কি মাইক্রোচিপ ব্যবহার করা
হতো? এত বছর আগেও কি অত্যাধুনিক সভ্যতা ছিল পৃথিবীতে?
গবেষকরা এটাও ভাবছেন, তাহলে কি এই পাথরের মাইক্রোচিপ অন্যগ্রহের কেউ
ব্যবহার করতো? এর সঙ্গে আরো একটি প্রশ্ন যুক্ত হচ্ছে, এটি যদি পৃথিবীর না
হয়, তাহলে কি অন্য কোনো গ্রহ কিংবা গ্যালাক্সি থেকে আগত উন্নত কোনো
প্রজাতির প্রাণী এটি ব্যবহার করেছে?
নাহ! গবেষকরা এ সব প্রশ্নের কোনো কূলকিনারাই করতে পারছেন না। কিন্তু
তাদের মাথায় একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে যে, এটা মাইক্রোচিপ, যা এখনকার
মানবসভ্যতায় ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি প্রাচীনকালে কীভাবে ব্যবহৃত হবে?
ইউএফওলজিস্টরা (Ufologists) বলছেন, প্রাচীন এই প্রযুক্তি বিজ্ঞানের কাছে একবারেই অজানা একটি বিষয়।
পাথরের এই মাইক্রোচিপটি রাশিয়ার ক্রাসনোদার অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া গেছে।
ভিক্টর মোরোজোভ নামে এক জেলে হঠাৎ করেই এটি খুঁজে পান। তারপর তিনি এটিকে
ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন পলিটেকনিক নোওজার্কাসকেইজে দান করেন,
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য।
এরপর সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার পর জানা গেল যে, এটি
প্রাচীনকালে ব্যবহৃত একধরনের মাইক্রোচিপ। তবে এটি পাথরের তৈরি ও এটি এখন
থেকে দুই কোটি ৫০ লাখ বছর আগে ব্যবহৃত হয়েছে। এরপরই এই ডিভাইসটি নিয়ে
বিশ্বজুড়ে হৈচৈ পড়ে যায়।
তবে ভেঙে যেতে পারে বা ক্ষতি হতে পারে বিধায় পাথরের গা থেকে পাথরের চিপটিকে আলাদা করেননি।
ভূতত্ত্ববিদ ও গবেষকরা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারেননি যে,
এটি আসলে কী বস্তু! তারা বিভিন্নধরনের ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন।
যেমন- এটি হতে পারে, বহির্বিশ্ব থেকে আগত প্রাচীনকালের অত্যাধুনিক কোনো
প্রযুক্তি; হতে পারে প্রকৃতির খেয়ালে তৈরি কোনো পাথর।
এ ছাড়াও কোনো কোনো গবেষক বলছেন, এমনও হতে পারে যে, এটি কোনো গাছের স্টেম
প্ল্যান্ট (Stem Plant)। হতে পারে- পদ্ম (lillies) বা অন্য কোনোগাছের
স্টেম প্ল্যান্ট বা সেটি নাও হতে পারে।
তারা এটাও বলছেন, এমন অনেক আবিষ্কারই তো আছে, যার কোনো ব্যাখ্যা এখন
পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তেমন কোনো বস্তুও এটি হতে পারে, যার কোনো সদুত্তর
এখনো পাওয়া যায়নি।
যতদিন পর্যন্ত এর সদুত্তর না পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত গবেষকরা ধরে
নিচ্ছেন, এটি হতে পারে প্রাচীনকালের অত্যাধুনিক সভ্যতার কোনো অত্যাধুনিক
প্রযুক্তি; যা এখনকার মাইক্রোচিপেরই অনুরূপ!